অ্যান্ড্রু জনসন (১৭ তম মার্কিন রাষ্ট্রপতি)

অ্যান্ড্রু জনসন প্রথম মার্কিন নেতা যিনি অভিশংসন এর শিকার হয়েছেন। ১৮৬৮ সালে এই ঘটনা ঘটেছিল যখন তিনি চলমান তিন বছর ধরে দ্বায়ীত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। আব্রাহাম লিংকনকে হত্যার পর তিনি দেশের পুরো রাজনৈতিক গতিপথকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিলেন এই কারণে তিনি তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন। তিনি কনফেডারেট নেতাদের জন্য ক্ষমা এবং মুক্তিপ্রাপ্তদের রাজনৈতিক অধিকার ভেটো দেওয়ার আহ্বান জানান। এই পন্থাই তাকে কংগ্রেসের সাথে দ্বন্দে ফেলেছে। চূড়ান্ত বিষয় ছিল এডউইন স্ট্যান্টনকে বরখাস্ত করা, লিঙ্কনকে নিযুক্ত করা সেক্রেটারি হিসাবে। স্ট্যান্টন মুক্ত আফ্রিকান আমেরিকানদের জন্য ভোটাধিকার এবং নাগরিক অধিকার সমর্থন করেছিলেন। আশ্চর্যের কিছু নেই, সিনেট হাউসে অপবাদের ১১টি নিবন্ধ পাস করেছে। যখন জনসনকে সেনেটে বিচার করা হয়েছিল, তখন তিনি একক ভোটে তার রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রাখতে যথেষ্ট ভাগ্যবান ছিলেন।

রিচার্ড নিক্সন (৩৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট)

পরবর্তী অভিশংসন বিচার যা ১৯৭৪সালে ৩৭ তম মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে আনা হয় । উল্লেখযোগ্যভাবে, নিক্সন যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন তাকে নিয়ে অনেক বাজে গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। উদাহরণ স্বরূপ, একজন দেশের নেতা হিসাবে তার বছর জুড়ে, তিনি ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির দ্বারা প্ররোচিত ছিলেন, যা প্রধানত একটি প্রধান নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বীর সদর দফতরের ওয়্যারট্যাপ করার অভিযোগের ভিত্তিতে ছিল। চলমান ওয়াটারগেট তদন্তের সমস্ত বিবরণ জনসাধারণের কাছে উন্মোচিত হওয়ার সাথে সাথে নিক্সনের ভবিষ্যত সম্পর্কে কোনও বিভ্রম ছিল না। তিনি অভিশংসনের বিচার এড়াতে পারেননি। এই কারণেই তিনি অভিশংসন কার্যক্রম শুরুর জন্য অপেক্ষা না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং পদত্যাগ করেন। তিনিই প্রথম রাষ্ট্রপতি যিনি স্বেচ্ছায় অফিস ছেড়েছিলেন। মজার ব্যাপার হল, নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন এবং নিক্সনকে কোন অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়নি।

বিল ক্লিনটন (৪২ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট)

ক্লিনটন-লুইনস্কি রাজনৈতিক যৌন কেলেঙ্কারির কারণে বিল ক্লিনটন তার খ্যাতি নষ্ট করেছিলেন। ১৯৯৮ সালে, তিনি হোয়াইট হাউসের ইন্টার্ন মনিকা লিউইনস্কির সাথে সম্পর্ক থাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। ক্লিনটনের ব্যক্তিগত জীবনের অন্তরঙ্গ বিবরণ সমগ্র দেশ এমনকি সমগ্র বিশ্ব দ্বারা অতিরঞ্জিত ছাড়াই আলোচনা করা হয়েছিল। জনসাধারণ একজন তরুণ কর্মচারীর সাথে বিল ক্লিনটনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে নয় বরং দীর্ঘ সময়ের জন্য এটি অস্বীকার করার কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছিল। এর অর্থ হল তিনি তার ভোটারদের কাছে প্রকাশ্যে মিথ্যা বলেছেন। শপথ করেও তিনি মিথ্যা বলতে থাকেন। ফলে সরকার অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, এটি সাফল্যের মুকুট পায়নি। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস অবশেষে ক্লিনটনের ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পেতে ব্যর্থ হয়। কেলেঙ্কারির নয় বছর পর, বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ বাদ দেওয়া হয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্প (৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট)

প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার অভিশংসন এর মুখোমুখি হয়েছেন। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে, মার্কিন কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিক অভিশংসন পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। এর কারণ হলো , একটি বেনামী প্রতিবেদন ছিল যে আমেরিকান নেতা ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির জেলেনস্কির উপর উল্লেখযোগ্য চাপ প্রয়োগ করছেন। কৌতূহলজনকভাবে যথেষ্ট, মূল ফোকাস এই সত্যটির উপর ছিল যে ট্রাম্প জেলেনস্কিটোকে একটি তদন্ত শুরু করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিলেন যা নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী - জো বিডেন এবং তার ছেলের রেটিং নষ্ট করবে। তবুও, ট্রাম্পের শত্রুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছিল এবং অভিযোগগুলি বাদ দেওয়া হয়েছিল। যাইহোক, মাত্র কয়েক মাস পরে, দেশের ৪৫ তম নেতার বিরুদ্ধে আবারও অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই সময়, তার বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থানের প্ররোচনা এবং নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতার বৈধ হস্তান্তরকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ৬ জানুয়ারী, ২০২১-এ, ট্রাম্পের সমর্থকরা ইউএস ক্যাপিটলে আক্রমণ করেছিল, যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস ১৩জানুয়ারী, ২০২১-এ রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে অপবাদ এর পক্ষে ভোট দেয়, যা তাকে আমেরিকার ইতিহাসে একমাত্র রাষ্ট্রপতি যিনি দুবার অপবাদ লাভ করেছেন ।